‘বাংলাদেশ আর বাচ্চা নেই’! স্টার স্পোর্টসের বিজ্ঞাপনটা এরই মধ্যে নজর কেড়েছে সবার। আসন্ন বাংলাদেশ-ভারত সিরিজ নিয়ে অনুষ্ঠানও শুরু করেছে স্টার স্পোর্টস। চ্যানেলটির ‘গেম প্লান’ অনুষ্ঠানে আজ বাংলাদেশকে প্রশংসায় ভাসালেন শোয়েব আক্তার। কদিন আগে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। সাবেক পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার সেই অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা করলেন, তাঁর দৃষ্টিতে কীভাবে বদলে গেছে বাংলাদেশ।
প্রথমেই বাংলাদেশের শক্তির দিকগুলো জানতে চাওয়া হয়েছিল শোয়েবের কাছে। ‘রাউলপিন্ডি এক্সপ্রেস’ বললেন, ‘তারা দাপটের সঙ্গেই আমাদের হারিয়েছে। তাদের ব্যাটিং শক্তি অনেক উন্নতি হয়েছে।’ এর পরই সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিলেন বাংলাদেশের শক্তি নিয়ে, ‘তাদের ব্যাটিং শক্তির মূল দিক হচ্ছে ওপেনার। তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার-মাহমুদউল্লাহ ব্যাট হাতে ছন্দে আছে। সবাই রান পেয়েছে এবং পাকিস্তানকে চাপে রেখেছে। তাদের ব্যাটিং এখন অনেক পরিণত। বিশেষ করে তামিম ইকবাল খুবই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান।’
বাংলাদেশকে দুর্দান্ত দল হিসেবে অভিহিত করে ভারতকেও সতর্ক থাকতে বললেন শোয়েব, ‘তাদের ব্যাটিং লাইনআপে নজর রাখতে হবে ভারতকে। ওয়ানডেতে তারা দারুণ দল। তবে যে মানের খেলোয়াড় রয়েছে, টেস্টে নিজেদের সক্ষমতা এখনো প্রমাণ করতে পারেনি বাংলাদেশ।’
বাংলাদেশকে দুর্দান্ত দল হিসেবে অভিহিত করে ভারতকেও সতর্ক থাকতে বললেন শোয়েব, ‘তাদের ব্যাটিং লাইনআপে নজর রাখতে হবে ভারতকে। ওয়ানডেতে তারা দারুণ দল। তবে যে মানের খেলোয়াড় রয়েছে, টেস্টে নিজেদের সক্ষমতা এখনো প্রমাণ করতে পারেনি বাংলাদেশ।’
পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটো ওয়ানডে সেঞ্চুরি ও টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করা তামিম দারুণ ফর্মে রয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডেতে মাঝে মধ্যেই তাঁর ব্যাট হাসলেও কোনো সেঞ্চুরি নেই তামিমের। ১৪ ম্যাচে করেছেন ৪২৬ রান, ফিফটি ৫টি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারেও তামিমের ২৯ ফিফটির বিপরীতে সেঞ্চুরি ছয়টি। একজন ওপেনারের ফিফটিগুলোকে বড় ইনিংসে টেনে নিয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন শোয়েব, ‘ফিফটিগুলো সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে হবে তামিমকে। সে যদি ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করতে পারে, তবে সেরা খেলোয়াড়ে পরিণত হবে। আর ফিফটি সেঞ্চুরিতে পৌঁছালে দলও পাবে বড় সংগ্রহ।’
শোয়েবকে উপস্থাপক ধরিয়ে দিলেন, সৌম্য-মাহমুদউল্লাহর মতো ছন্দে আছেন মুশফিকুর রহিমও। সবাই রান পাচ্ছেন, বড় জুটি গড়ছেন। এমনকি সাকিব আল হাসানের কথা ভুললেও চলবে না। বাংলাদেশ দলের সমন্বয়টা এখন দারুণ। বিশ্বকাপে ওপরের দিকে নেমে রান পেয়েছেন সৌম্য। একটু নিচে খেললেও রান পেয়েছেন মুশফিকও। পরপর দুই সেঞ্চুরি করেছেন মাহমুদউল্লাহ। উল্লিখিত সবাইকে ভারতের জন্য বিপজ্জনক। ধারণা করা হচ্ছে, বড় স্কোরের ম্যাচ হবে। ওয়ানডে সিরিজটা হবে দুই দলের ব্যাটিং বনাম ব্যাটিংয়ের লড়াই। বাংলাদেশ দলে যেমন দারুণ কিছু ব্যাটসম্যান আছে তেমনি ভারত দলের ব্যাটিং লাইনআপও বিশ্বের অন্যতম সেরা।
এরপর শোয়েব ভূয়সী প্রশংসা করলেন পেসার রুবেল হোসেনের। বললেন, ‘রুবেল হোসেন অসাধারণ বোলার। ফাস্ট বোলারের আগ্রাসী মনোভাব তার আছে। প্রতিটি বলেই নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। এখন সে উইকেট নিতেও জানে। ঠিক জায়গায় বল ফেলে, নিয়মিত উইকেট পায়। সে পরিণত ফাস্ট বোলার।’
পুরোনো বলে রুবেলের সুইংয়ের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সাবেক পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার বললেন, ‘পুরোনো বলে সুইং করতে জানে রুবেল। উইকেট নেওয়ার সামর্থ্যই তাকে ভালো ফাস্ট বোলারে পরিণত করেছে।’ প্রাসঙ্গিকভাবে এলো বিশ্বকাপে কোহলিকে ফিরিয়ে রুবেলের সেই আগ্রাসী ও উপভোগ্য উদ্যাপনও।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের আরেক সফল বোলার তরুণ তুর্কি তাসকিন আহমেদ। ৩ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। ভারতের জন্য ভয়ংকর হতে পারে এমনটা জানিয়ে তাসকিনকে নিয়ে শোয়েবের মূল্যায়ন, ‘তার বলে গতি আছে। ঠিক জায়গায় বল ফেলতে পারে। একই সঙ্গে বলব, অ্যাকশন নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন হওয়া দরকার নেই। খুব নির্ভার চিত্তে দৌড়াতে হবে। কী করতে হবে (পিচে), সেটি নিয়েই ভাবা জরুরি। অনেকে সাইড আর্মের অ্যাকশন নিয়ে কাজ করতে একাডেমিতে যায়। অ্যাকশন যা-ই হোক, ঠিক জায়গায় কীভাবে বল করতে হবে, সেটিই মূল ব্যাপার। তাসকিন এখনো শিখছে। হিথ স্ট্রিক তাকে সাহায্য করছেন।’
বাংলাদেশের উইকেট নিজেকে মেলে ধরা গতিময় পেসারদের জন্য একটু কঠিনই। এ কারণে বাংলাদেশের উইকেটের সমালোচনা করে শোয়েব বললেন, ‘ব্যাটসম্যানের জন্য বিভ্রান্তিকর বাউন্স দিতে পারে তাসকিন। কিন্তু বাংলাদেশের উইকেট খুবই মন্থর। প্রতিযোগিতামূলক ওয়ানডের জন্য দ্রুত গতির উইকেট বানাতে হবে। ভালো উইকেট হলো ম্যাচও হবে জমজমাট।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন